১. নরম মানেই নিরাপদ নয়। কতো নরম শামুকের মুখ, কিন্তু তার আছে ২৫ হাজার দাঁত !
২.
গতি দিয়েই বীর হওয়া যায় না। একটি নোংরা মাছিও মিনিটে ৮ কিলোমিটার উড়তে পারে!
৩.
দু’ একটি বিশেষত্বই কাউকে মহান করে না। মানুষের চেয়ে
২৮,০০০ গুণ অধিক ঘ্রাণশক্তি থাকা সত্তেও কুকুর কুকুর হয়ে আছে!
৪.
কেবল সংখ্যাধিক্য দিয়েই ক্ষমতা লাভ হয় না। পৃথিবীর প্রাণীদের মধ্যে ৮০ ভাগই পোকামাকড়!
৫.
কোনো কারণে যাকে তুচ্ছ ভাবা হচ্ছে, ভিন্ন কারণে সে হয়তো মূল্যবান।১৫০ টি বাদুড় বছরে যে পরিমাণ ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলে,তাতে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলারের ফসল রক্ষা পায়!
৬.
উটপাখিদের থেকে শেখার আছে। সংসারের সামান্য কাজকেও তারা একার উপর চাপিয়ে দেয় না। নিজেদের ডিমে তা দিতেও করে ভাগাভাগি। দিনের বেলায় স্ত্রী উটপাখি ডিমে তা দেয়, রাতের বেলায় দেয় পুরুষ উটপাখি।
৭.
সৃষ্টিকর্তা যাকে যেভাবে সাজিয়েছেন, তাতে খুশি না থাকলে পিঁপড়াদের দিকে তাকাও! পৃথিবীতে পিঁপড়া আছে প্রায় ১০ কোয়াড্রিলিয়ন এর মত। [১ কোয়াড্রিলিয়ন = ১০,০০,০০০ বিলিয়ন] তারা আকারে আরেকটু বড় হলে পৃথিবী পিঁপড়াদের দখলে চলে যেতো!
৮.
লাফ দিতে হয় এগিয়ে যাবার জন্য, মাথা দেখানোর জন্য নয়। লাফ দিয়ে ব্যাঙ নিজের থেকে ২০ গুণ উচ্চতা অবধি উঠতে পারে। কিন্তু সে যতই উপরে উঠতে চায়, ততই কমে যায় সামনে যাবার শক্তি!
৯.
অতিমাত্রায় যৌনতার চর্চা গর্বের হলে গর্ব করার বেশি অধিকার ইঁদুরের। ইঁদুরজগতে যৌনতা ও প্রজণন এতো বেশি যে, মাত্র ১৮ মাসে একজোড়া ইঁদুর থেকে ১০ লাখের বেশি স্বজন তৈরি হতে পারে।
১০.
সৌন্দর্য দেখেই মজে যেতে নেই। জেলিফিশ দেখতে খুবই সুন্দর। কিন্তু তার বিষাক্ত শুঁড় ৩৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
১১.
শক্তির ব্যবহারে হিসেবী হতে হয়। বিষের অপচয়ের ভয়ে এনাকোন্ডা সাপ কামড়ের বদলে শিকারকে চেপে শ্বাসরুদ্ধ করে সময় নিয়ে মারে!
১২.
অন্যকে কষ্ট দিয়ে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। বাড়িতে ভনভন করা মাছি বেঁচে থাকে দুই থেকে তিন সপ্তাহ!
১৩.
দুর্বলের সাথে দুর্বলের ঐক্য থেকে জন্ম নিতে পারে নতুন শক্তি। দুর্বল চুলের সাথে চুল একত্রিত হয়ে জন্ম নিয়েছে গণ্ডারের মাথার সামনের দিকে থাকা অত্যন্ত শক্তিশালী শিং। এতে না আছে কোনো হাড়, না অন্য কোনো পদার্থ।
১৪.
যারা বিপজ্জনক, তাদের দেখার শক্তিই আলাদা। চোখ বন্ধ করলেও সাপ দেখতে পায়।
১৫.
প্রয়োজন যেখানে যেমন, প্রাকৃতিকভাবে যোগ্যতার সরবরাহ সেখানে অনুরূপ। হাতির প্রবলভাবে চাই পানি। অতএব পানি প্রায় ১২ মাইল দূরে থাকলেও হাতি তা বুঝতে পারে!
১৬.
বাহ্যিক দৃশ্য দেখেই কিছু একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়া ভুল। হাতিরা পরস্পরে শুড় নাড়াচাড়া করছে দেখে অনেকেই ভাবে ঝগড়া হতে যাচ্ছে। আসলে তারা দেখা হলে শুড় দিয়ে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়!
১৭.
পরিবেশের কাছে হেরে গেলে চলে না, তাকে নিজের অনুকূলে ব্যবহারের পথ করে নিতে হয়। ব্যাঙ পানিতে থাকে, কিন্তু পানি পান করে না। শরীরে যে পরিমাণ পানি প্রয়োজন তা ত্বকের সাহায্যে শুষে নেয়।
১৮.
তোমার কিছু একটা নেই। সে জন্য থেমে যেয়ো না। যা নেই, এর বিকল্প সামনে আসবেই। পিঁপড়ার কান নেই। শোনার জন্য এরা ভূমির কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে ।
১৯.
আরো চাই আরো চাই ভালো না। খাদ্য পেটে থাকলে কিং কোবরার মতো সাপ শক্তি ও সুযোগ থাকার পরেও প্রায়ই এক মাস পর্যন্ত শিকার করে না!
২০.
নিয়মিত নিজেকে নবায়ন করা ভালো। কিন্তু যা কিছু পুরাতন, তাও পরিহারের নয়। ব্যাঙ প্রায় প্রতি ১ সপ্তাহ পরে নিজের গায়ের চামড়া বদলায়। নতুন চামড়া গজালে পুরনো চামড়া নষ্ট হতে দেয় না, সাধারণত খেয়ে ফেলে!
২১.
অদম্য ইচ্ছা ও প্রয়াস অসম্ভব থেকে ‘অ’কে সরিয়ে দেয়। থাকে শুধু সম্ভব। সকল প্রাণী কমবেশি ঘুমালেও পিঁপড়া একদমই ঘুমায় না! কাজের নেশা কেড়ে নিয়েছে তার ঘুমের আয়োজন !
২২.
শামুক হার মেনেছে ঘুমের নেশার কাছে। একটানা তিন বছর ঘুমাতে পারে সে। শামুকের জীবন আছে, কিন্তু বলার মতো তেমন কাজ নেই জীবনে!
২৩.
একেবারে নিদ্রাত্যাগ মানুষের কাজ নয়। নিদ্রা চাই, কিন্তু যতটা আবশ্যক, ততটা। হরিণের প্রতি লক্ষ্য করুন। প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিটের মতো ঘুমালেই তার চলে!
২৪.
সৃষ্টি হচ্ছে বিধাতার শিল্পকর্ম। কোনো কিছুতেই একঘেয়েমি নেই, আছে বৈচিত্র। ধরুন, কানের অবস্থান। ফড়িং এর কান রাখা হয়েছে তার হাঁটুতে!
২৫.
চালাক লোকেরা তৃতীয় চোখের বাহাদুরি করে। তাদের জানা উচিত প্রজাপতির চোখের সংখ্যা ১২ হাজার!
২৬.
স্বাদ আস্বাদনের জন্য যারা জীবন যাপন করে, তারা কি জানে, প্রজাপতি স্বাদ আস্বাদন করে তার পা দিয়ে?
২৭.
নিজের কদমকে মজবুত করো। বাঘ মরে যাবার পরেও আপন পায়ের উপর খাড়া থাকতে পারে!
২৮.
শক্তি দেখিয়ে বেড়ানোর জিনিশ নয়। একমাত্র শিকারের মুহূর্ত ছাড়া বাঘ সবসময় নিজের নখরকে গুটিয়ে রাখে!
২৯.
জোর দিয়েই সব করা যায় না। শক্তি হিসেবে কৌশল সবচে’ উপাদেয় । শিকারের প্রয়োজনে বাঘকে কুকুর, বিড়াল, হরিণ কিংবা বানরের ডাক নকল করে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হয়!
৩০.
ক্ষুদ্র লক্ষ্য জীবনের অপচয় ডেকে আনে। পুরুষ মাছি তার ১৪ দিনের জীবন কাটিয়ে দেয় স্ত্রী মাছির মনোরঞ্জনে, যেখানে সে প্রায়ই ব্যর্থ হয়!
৩১.
কাজ যতোই করা হবে, বাড়তে থাকবে কর্মশক্তি। ‘কাজের লোক’ পিঁপড়া নিজের ওজনের প্রায় ১০ গুণ ভারি জিনিস বহন করতে পারে, যা পারে না অন্য কোনো প্রাণী!
৩২.
জিরাফের ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করে সিংহ যখন তার উপর হামলে পড়ে, জিরাফ তখন হিংস্র হয়ে উঠে। তখন তার একটি শক্ত লাথিতে নিমেষেই মারা যেতে পারে একটি সিংহ!
৩৩.
অন্ধকারে দেখার ক্ষমতা বাঘের বাঘ হওয়ার অন্যতম কারণ। অন্ধকারে মানুষের চেয়ে ছয়গুণ বেশি দেখতে পারে বাঘ।
৩৪.
পরস্পরের শক্তি দিয়ে পরস্পরের দুর্বলতা ঢেকে দেয়াই বন্ধুত্ব। উটপাখি ও জেব্রা ভালো বন্ধু। শিকারী থেকে বাঁচার জন্য উটপাখির দৃষ্টিশক্তি জেব্রাকে সহায়তা করে, কারণ দৃষ্টিশক্তিতে জেব্রা দুর্বল। জেব্রার ঘ্রাণ ও শ্রবণশক্তি উটপাখিকে সহায়তা করে। কারণ ঘ্রাণ ও শ্রবণের শক্তিতে উটপাখি দুর্বল।
৩৫.
যেখানে যে প্রথা, তাকে সমীহ করতে হয়। বাঘেরা লেজ নাড়াচাড়া করে পরস্পরে ভালোবাসা বিনিময় করে!
৩৬.
মর্যাদায় বড় হতে হলে মনেও বড় হতে হয়। একটি বাঘের শিকার করা খাবারে শেয়াল, হায়েনা ও শকুনেরা ভাগ বসায়। বাঘের এতে আপত্তি থাকে না।
৩৭.
একটি তেলাপোকা তার মাথা ছাড়া ৯দিন পর্যন্ত বাঁচতে পারে। কিন্তু একশ্রেণীর মানুষ মাথা ছাড়া কাটিয়ে দেয় পুরো জীবন!
৩৮.
লক্ষ্য ও পরিকল্পনাহীন ঘুম জীবনকে নিরর্থক করে, লক্ষ্য ও পরিকল্পনাহীন জাগরণ জীবনকে করে হত্যা। সিডকা পোকা একটানা ১৭ বছর মাটির নিচে ঘুমায়। তারপর মাটি থেকে বেরিয়ে এসে চিৎকার করতে করতে ৩ দিনের মাথায় মারা যায়!
৩৯.
অধিক উৎপাদন অধিক মান নিশ্চিত করে না। টিকটিকি একসাথে ডিম পাড়ে ত্রিশটি। প্রাণীদের মধ্যে সে অনুল্লেখ্যপ্রায়। কিন্তু উটপাখি ডিম দেয় একটি, পাখিদের রাজা হয়ে সে টিকে আছে ১২০ মিলিয়ন বছর ধরে !
৪০.
বর্ষায় শুধু পুরুষ ব্যাঙ চিৎকার করে বলে পুরুষদের প্রতি বিরক্ত হয়ো না। মানুষকে কখনো পুরুষ মশা কামড়ায় না। মানুষের রক্তচোষা মশাটি হয় নারী। নারী-পুরুষের কেউ একাই দোষে নেই!
৪১.
শুধু গর্জনেই বাঘ হওয়া যায় না। পরিকল্পনা করে বাঘ যখন শিকারকে ফাঁদে ফেলে দেয়, তারপর দেয় গর্জন। বাঘের গর্জনেই অধিকাংশ শিকার হতবুদ্ধি কিংবা প্যারালাইজড হয়ে যায়!
৪২.
কিছু সিংহ নিজেকে হারিয়ে ফেলে। যখন আক্রান্ত হয়, নিজেকে খোঁজে পায়, আবারো সিংহ হয়ে যায়!
৪৩.
জন্মের পর বাচ্ছা বাঘ অন্ধ থাকে একসপ্তাহ, সিংহ থাকে দুই সপ্তাহ। বাঘ ও সিংহের জীবন যাপনে তাদেরকে প্রথমেই যা অর্জন করতে হয়, সেটা হচ্ছে প্রখর দৃষ্টিশক্তি!
৪৪.
যে কাজের নয়, তাকে দিয়েও বড় কাজ হতে পারে। বাঘ তার প্রশ্রাব দিয়ে নিজের সীমানা চিহ্নিত করে নেয়!
৪৫.
শুধু সামাজিক না হবার কারণে সিংহের কাছে বনের রাজার মর্যাদা হারিয়েছে বাঘ!
৪৬.
যে মৌমাছির মুখে মধু আছে, তার পেছনের হুলে আছে বিষ! একটি আরেকটিকে দিয়েছে পূর্ণতা।
৪৭.
দাঁড়িয়ে থাকা মানেই জাগ্রত থাকা নয়। ঘোড়ার মতো প্রাণীও দাঁড়িয়ে ঘুমায়!
৪৮.
যেখানে সমস্যা প্রবল, সেখানে আছে সমানমাত্রার সম্ভাবনা। বাঘের জিহ্বা এতোই রুক্ষ্ম, তা দিয়ে মানুষকে চাটলে গায়ের চামড়া ছিলে যায়, কিন্তু বাঘের লালায় আছে রোগের নিরাময়!
৪৯.
যাকে নিরর্থক ভাবছো, হয়তো ভাবনার পেছনে আছে নিজের সীমাবদ্ধতা। বাঘের লেজ নাড়ানোকে লোকেরা ভাবে অর্থহীন। কিন্তু লেজ নাড়িয়ে বাঘেরা ভাববিনিময় করে!
৫০.
অন্যের জন্য ভয়ঙ্কর হলেই টিকে থাকা যায় না।
Collected.
0 Comments